Dhaka 11:40 pm, Wednesday, 16 July 2025

নাগরপুর সরকারি কলেজ মসজিদ সংলগ্ন সীমানায় ময়লার ভাগাড়, শিক্ষার্থী ও মুসল্লিদের উদ্বেগ

টাঙ্গাইলের নাগরপুর সরকারি কলেজের সীমানা ঘেঁষে দীর্ঘদিন ধরে বাজার ও আশপাশের এলাকার কিছু অসচেতন মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছেন। বিশেষ করে কলেজ সংলগ্ন মসজিদের পাশে এবং পুকুর পাড়ে নিয়মিতভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। এতে করে নষ্ট হচ্ছে কলেজের পরিচ্ছন্ন ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ, বাড়ছে মশা-মাছির উৎপাত, আর শিক্ষার্থী ও মুসল্লিদের স্বাভাবিক চলাফেরায় সৃষ্টি হচ্ছে চরম বিঘ্ন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে এবং পুকুর পাড়জুড়ে ময়লার স্তুপ জমে আছে। কেউ কেউ প্রকাশ্যে ওই এলাকায় মূত্রত্যাগও করছেন। এ পথ দিয়েই শিক্ষার্থীদের কলেজে প্রবেশ করতে হয়। দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশের কারণে শিক্ষার্থী ও মুসল্লিদের মধ্যে বিরক্তি ও হতাশা বিরাজ করছে।

কলেজ মসজিদের একজন নিয়মিত মুসল্লি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, মসজিদের পাশে ময়লার স্তূপ জমে থাকায় পরিবেশ নোংরা হয়ে যাচ্ছে। নামাজে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আরেক মুসল্লি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ের পাশে ময়লা ফেলা সত্যিই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।

মোঃ ইমরান হোসেনসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কলেজে আসার সময় চারপাশের নোংরা পরিবেশ দেখে মানসিকভাবে অস্বস্তি লাগে। এমন পরিবেশে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করা যায় না।
একজন ছাত্রী বলেন, ময়লার কারণে মশা-মাছি বেড়ে গেছে। এতে আমরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছি। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা আরও বাড়বে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কলেজের পাশে নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন না থাকায় অনেকেই নির্বিঘ্নে ময়লা ফেলছেন। বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুম ঘনিয়ে আসায় ডেঙ্গু ও মশাবাহিত রোগের আশঙ্কাও করছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে আমাকে আগে কেউ অবগত করেননি। তবে আমি দ্রুত এলাকাটি পরিদর্শন করবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

নাগরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (প্রিন্সিপাল) মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, কলেজের মতো পবিত্র শিক্ষাঙ্গনের পাশে এভাবে ময়লা ফেলা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি প্রাথমিকভাবে আশপাশের দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের এখানে ময়লা না ফেলতে অনুরোধ করেছি। অনুরোধ সত্ত্বেও তারা নিয়মিতভাবে সেখানে ময়লা ফেলে যাচ্ছেন। আমরা চাই, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

সিংগারবিল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত

নাগরপুর সরকারি কলেজ মসজিদ সংলগ্ন সীমানায় ময়লার ভাগাড়, শিক্ষার্থী ও মুসল্লিদের উদ্বেগ

Update Time : 12:42:56 pm, Thursday, 1 May 2025

টাঙ্গাইলের নাগরপুর সরকারি কলেজের সীমানা ঘেঁষে দীর্ঘদিন ধরে বাজার ও আশপাশের এলাকার কিছু অসচেতন মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছেন। বিশেষ করে কলেজ সংলগ্ন মসজিদের পাশে এবং পুকুর পাড়ে নিয়মিতভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। এতে করে নষ্ট হচ্ছে কলেজের পরিচ্ছন্ন ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ, বাড়ছে মশা-মাছির উৎপাত, আর শিক্ষার্থী ও মুসল্লিদের স্বাভাবিক চলাফেরায় সৃষ্টি হচ্ছে চরম বিঘ্ন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে এবং পুকুর পাড়জুড়ে ময়লার স্তুপ জমে আছে। কেউ কেউ প্রকাশ্যে ওই এলাকায় মূত্রত্যাগও করছেন। এ পথ দিয়েই শিক্ষার্থীদের কলেজে প্রবেশ করতে হয়। দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশের কারণে শিক্ষার্থী ও মুসল্লিদের মধ্যে বিরক্তি ও হতাশা বিরাজ করছে।

কলেজ মসজিদের একজন নিয়মিত মুসল্লি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, মসজিদের পাশে ময়লার স্তূপ জমে থাকায় পরিবেশ নোংরা হয়ে যাচ্ছে। নামাজে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আরেক মুসল্লি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ের পাশে ময়লা ফেলা সত্যিই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।

মোঃ ইমরান হোসেনসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কলেজে আসার সময় চারপাশের নোংরা পরিবেশ দেখে মানসিকভাবে অস্বস্তি লাগে। এমন পরিবেশে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করা যায় না।
একজন ছাত্রী বলেন, ময়লার কারণে মশা-মাছি বেড়ে গেছে। এতে আমরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছি। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা আরও বাড়বে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কলেজের পাশে নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন না থাকায় অনেকেই নির্বিঘ্নে ময়লা ফেলছেন। বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুম ঘনিয়ে আসায় ডেঙ্গু ও মশাবাহিত রোগের আশঙ্কাও করছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে আমাকে আগে কেউ অবগত করেননি। তবে আমি দ্রুত এলাকাটি পরিদর্শন করবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

নাগরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (প্রিন্সিপাল) মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, কলেজের মতো পবিত্র শিক্ষাঙ্গনের পাশে এভাবে ময়লা ফেলা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি প্রাথমিকভাবে আশপাশের দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের এখানে ময়লা না ফেলতে অনুরোধ করেছি। অনুরোধ সত্ত্বেও তারা নিয়মিতভাবে সেখানে ময়লা ফেলে যাচ্ছেন। আমরা চাই, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।