Dhaka 2:48 pm, Friday, 11 July 2025

ডিমলায় সক্রিয় মোটরসাইকেল চোর চক্র, জনমনে আতঙ্ক

নীলফামারীর ডিমলায় হরহামেশাই মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন মোটরসাইকেল মালিকগণ।

গত কয়েক মাসে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, বাসাবাড়িসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ের মাঠ থেকে ৫ আগস্টের পর প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ চুরির ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্য দিবালোকে। অতি প্রয়োজনীয় ও শখের মোটরসাইকেল চুরি যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন চালকেরা। চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধারসহ চোরদের আইনের দ্রুত আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীগণ।

গত শুক্রবার (৭ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার শুটিবাড়ি-টেপাখড়িবাড়ি প্রধান সড়কের ব্যস্ততম এলাকায় ব্র্যাক অফিসের গ্যারেজে নিজের পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল রেখে সামান্য কেনাকাটার জন্য শুটিবাড়ি বাজারে আসেন আব্দুর রফিক সরকার নামের এক ক্ষুদ্র পাথর ও ইট ব্যবসায়ী। ২০মিনিট পর গ্যারেজে গিয়ে দেখেন তার শখের মোটরসাইকেলটি আর নেই! অনেক খোঁজাখুঁজির পর মোটরসাইকেলটি আর না পেয়ে ডিমলা থানায় গিয়ে জিডি করেন তিনি।

শুধু আব্দুর রফিক নন, গত কয়েক মাস আগে ডিমলা সদর ইউনিয়নের ব্র্যাক অফিস সংলগ্ন বাড়ির সামনে থেকে সাংবাদিক দুলাল হোসেনের গ্লামার ১২৫ সিসি মোটরসাইকেলও চুরি হয়ে যায়। এছাড়াও গত এক মাস আগে খালিশা চাপানি ইউনিয়নের আব্দুল খালেক নামের এক ব্যক্তির ১০০ সিসি ডিসকভার ডিমলা সদর ইউনিয়নের সর্দারের হাট পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের মাসুদ নামে এক ব্যক্তির ১০০ সিসি ডিসকভার মোটরসাইকেল শুটিবাড়ি বাজার এলাকা থেকে চুরি হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দুলাল হোসেন বলেন, “মোটরসাইকেল আসলে একটি অতি প্রয়োজনীয় ও শখের বাহন। আমার মোটরসাইকেলটি চুরি হয়ে গেছে, এর জন্য আমি সঠিক সময়ে কোথাও যেতে পারছি না। গুরুত্বপূর্ণ কাজ কর্ম সময় মত করতে পারছিনা। প্রশাসনের উচিৎ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা।”

ডিমলা সদরের মোটরসাইকেল আরোহী হাবিবুর রহমান হাবীব বলেন, গত কয়েক মাসে ডিমলা উপজেলায় যে পরিমাণ গাড়ি (মোটরসাইকেল) চুরি হয়েছে, তা অকল্পনীয়। আমরা সাধারণ বাইকার যারা আছি দৈনন্দিন কাজের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করি তারা মোটরসাইকেলটি কোথাও রেখে শান্তি পাই না। সব সময় আতঙ্কে থাকি যে, কখন কে নিয়ে যায়। প্রশাসন এই জায়গায় কেন ব্যর্থ হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। কেন এদেরকে ধরতে পারছে না? এটা বোধগম্য হচ্ছে না।

বিশিষ্টজনদের মতে, গোটা উপজেলা জুড়ে একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র সাম্প্রতিক সময়ে প্রায়ই প্রকাশ্য দিবালোকে মোটরসাইকেল চুরি করছে। তারা দ্রুত এই চোরদের গ্রেফতার করে মোটরসাইকেল চুরি রোধ করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলে এলাহী বলেন, মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় একাধিক জিডি হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দীর্ঘদিনের অবহেলায় জনদুর্ভোগ সিঙ্গারবিল টু কাশিনগর সড়ক

ডিমলায় সক্রিয় মোটরসাইকেল চোর চক্র, জনমনে আতঙ্ক

Update Time : 03:29:57 pm, Monday, 10 March 2025

নীলফামারীর ডিমলায় হরহামেশাই মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন মোটরসাইকেল মালিকগণ।

গত কয়েক মাসে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, বাসাবাড়িসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ের মাঠ থেকে ৫ আগস্টের পর প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ চুরির ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্য দিবালোকে। অতি প্রয়োজনীয় ও শখের মোটরসাইকেল চুরি যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন চালকেরা। চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধারসহ চোরদের আইনের দ্রুত আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীগণ।

গত শুক্রবার (৭ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার শুটিবাড়ি-টেপাখড়িবাড়ি প্রধান সড়কের ব্যস্ততম এলাকায় ব্র্যাক অফিসের গ্যারেজে নিজের পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল রেখে সামান্য কেনাকাটার জন্য শুটিবাড়ি বাজারে আসেন আব্দুর রফিক সরকার নামের এক ক্ষুদ্র পাথর ও ইট ব্যবসায়ী। ২০মিনিট পর গ্যারেজে গিয়ে দেখেন তার শখের মোটরসাইকেলটি আর নেই! অনেক খোঁজাখুঁজির পর মোটরসাইকেলটি আর না পেয়ে ডিমলা থানায় গিয়ে জিডি করেন তিনি।

শুধু আব্দুর রফিক নন, গত কয়েক মাস আগে ডিমলা সদর ইউনিয়নের ব্র্যাক অফিস সংলগ্ন বাড়ির সামনে থেকে সাংবাদিক দুলাল হোসেনের গ্লামার ১২৫ সিসি মোটরসাইকেলও চুরি হয়ে যায়। এছাড়াও গত এক মাস আগে খালিশা চাপানি ইউনিয়নের আব্দুল খালেক নামের এক ব্যক্তির ১০০ সিসি ডিসকভার ডিমলা সদর ইউনিয়নের সর্দারের হাট পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের মাসুদ নামে এক ব্যক্তির ১০০ সিসি ডিসকভার মোটরসাইকেল শুটিবাড়ি বাজার এলাকা থেকে চুরি হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দুলাল হোসেন বলেন, “মোটরসাইকেল আসলে একটি অতি প্রয়োজনীয় ও শখের বাহন। আমার মোটরসাইকেলটি চুরি হয়ে গেছে, এর জন্য আমি সঠিক সময়ে কোথাও যেতে পারছি না। গুরুত্বপূর্ণ কাজ কর্ম সময় মত করতে পারছিনা। প্রশাসনের উচিৎ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা।”

ডিমলা সদরের মোটরসাইকেল আরোহী হাবিবুর রহমান হাবীব বলেন, গত কয়েক মাসে ডিমলা উপজেলায় যে পরিমাণ গাড়ি (মোটরসাইকেল) চুরি হয়েছে, তা অকল্পনীয়। আমরা সাধারণ বাইকার যারা আছি দৈনন্দিন কাজের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করি তারা মোটরসাইকেলটি কোথাও রেখে শান্তি পাই না। সব সময় আতঙ্কে থাকি যে, কখন কে নিয়ে যায়। প্রশাসন এই জায়গায় কেন ব্যর্থ হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। কেন এদেরকে ধরতে পারছে না? এটা বোধগম্য হচ্ছে না।

বিশিষ্টজনদের মতে, গোটা উপজেলা জুড়ে একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র সাম্প্রতিক সময়ে প্রায়ই প্রকাশ্য দিবালোকে মোটরসাইকেল চুরি করছে। তারা দ্রুত এই চোরদের গ্রেফতার করে মোটরসাইকেল চুরি রোধ করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলে এলাহী বলেন, মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় একাধিক জিডি হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।