Dhaka 12:05 am, Monday, 8 December 2025

তিস্তার একফোঁটা পানি আনতে পারেনি আ.লীগ : মির্জা ফখরুল

বিগত ১৫ বছরে ভারতের কাছে বাংলাদেশ থেকে অনেক কিছু বেচে দিয়েছে কিন্তু তিস্তার একফোঁটা পানি আনতে পারেনি আওয়ামী লীগ। শুধু তিস্তা নয়, ৫৪টি অভিন্ন নদীর উজানে ভারত বাঁধ দিয়েছে। বাঁধ দিয়ে তারা পানি তুলে নিয়ে যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। আর আমাদের দেশের মানুষ এখানে ফসল ফলাতে পারে না। জীবন-জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়। জেলেরা মাছ ধরতে পারে না। প্রত্যেকটা মানুষকে কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা রেলসেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে কাউনিয়াসহ তিস্তা বিস্তৃত রংপুর অঞ্চলের ১১টি পয়েন্টে একযোগে ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি পালন করছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিস্তা বাঁচানোর ডাক আমাদের অন্তরের ডাক। আমরা লড়াই করেছি ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। আমাদের ছেলেরা লড়াই করেছে। ৩৬ দিনের সকলের লড়াইয়ের মাধ্যমে তিনি (শেখ হাসিনা) ওই ভারতে পালিয়েছেন। একদিকে পানি দেয় না, অন্যদিকে আমাদের যে শত্রু তাকে (হাসিনা) দিল্লিতে রাজার হালতে বসিয়ে রেখেছে। সেখান থেকে তিনি আবার আওয়ামী লীগারদের বিভিন্ন হুকুম রাজি করেন।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আজকের এই সংগ্রাম আমাদের বাঁচা-মরার সংগ্রাম। তিস্তাপাড়ের মানুষের এই সংগ্রামকে আবার কখনো বন্ধ হতে দেবো না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই তিস্তা নিয়ে আপনাদের মুখ খুলতে হবে। ভারতকে বলতে হবে আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আর আপনারা যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেহেতু যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন।

ভারতের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যদি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব যুক্ত করতে চান তাহলে আগে তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে হত্যা বন্ধ করেন। আর আমাদের সঙ্গে বড় দাদার মতো আচরণ বন্ধ করেন। আমরা আমাদের পায়ের ওপর দাঁড়াতে চাই। আমরা আমাদের হিস্যা বুঝে নিতে চাই। আমরা অবশ্যই ভারতকে বন্ধুত্বের সঙ্গে দেখতে চাই। যে বন্ধুত্ব হবে সম্মানের সঙ্গে আমাদের পাওনা বুঝিয়ে দেবার।

এর আগে, সোমবার সকাল থেকে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর সেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায় নদীপাড়ের হাজারো মানুষকে। এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক সড়কের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

তিস্তার একফোঁটা পানি আনতে পারেনি আ.লীগ : মির্জা ফখরুল

Update Time : 08:24:58 pm, Monday, 17 February 2025

বিগত ১৫ বছরে ভারতের কাছে বাংলাদেশ থেকে অনেক কিছু বেচে দিয়েছে কিন্তু তিস্তার একফোঁটা পানি আনতে পারেনি আওয়ামী লীগ। শুধু তিস্তা নয়, ৫৪টি অভিন্ন নদীর উজানে ভারত বাঁধ দিয়েছে। বাঁধ দিয়ে তারা পানি তুলে নিয়ে যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। আর আমাদের দেশের মানুষ এখানে ফসল ফলাতে পারে না। জীবন-জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়। জেলেরা মাছ ধরতে পারে না। প্রত্যেকটা মানুষকে কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা রেলসেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে কাউনিয়াসহ তিস্তা বিস্তৃত রংপুর অঞ্চলের ১১টি পয়েন্টে একযোগে ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি পালন করছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিস্তা বাঁচানোর ডাক আমাদের অন্তরের ডাক। আমরা লড়াই করেছি ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। আমাদের ছেলেরা লড়াই করেছে। ৩৬ দিনের সকলের লড়াইয়ের মাধ্যমে তিনি (শেখ হাসিনা) ওই ভারতে পালিয়েছেন। একদিকে পানি দেয় না, অন্যদিকে আমাদের যে শত্রু তাকে (হাসিনা) দিল্লিতে রাজার হালতে বসিয়ে রেখেছে। সেখান থেকে তিনি আবার আওয়ামী লীগারদের বিভিন্ন হুকুম রাজি করেন।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আজকের এই সংগ্রাম আমাদের বাঁচা-মরার সংগ্রাম। তিস্তাপাড়ের মানুষের এই সংগ্রামকে আবার কখনো বন্ধ হতে দেবো না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই তিস্তা নিয়ে আপনাদের মুখ খুলতে হবে। ভারতকে বলতে হবে আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আর আপনারা যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেহেতু যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন।

ভারতের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যদি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব যুক্ত করতে চান তাহলে আগে তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে হত্যা বন্ধ করেন। আর আমাদের সঙ্গে বড় দাদার মতো আচরণ বন্ধ করেন। আমরা আমাদের পায়ের ওপর দাঁড়াতে চাই। আমরা আমাদের হিস্যা বুঝে নিতে চাই। আমরা অবশ্যই ভারতকে বন্ধুত্বের সঙ্গে দেখতে চাই। যে বন্ধুত্ব হবে সম্মানের সঙ্গে আমাদের পাওনা বুঝিয়ে দেবার।

এর আগে, সোমবার সকাল থেকে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর সেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায় নদীপাড়ের হাজারো মানুষকে। এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।