
রাজশাহীতে আমের গাছে এসেছে অসংখ্য মুকুল
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার রাজশাহীর আমগাছগুলো আগেভাগেই মুকুলে ছেয়ে গেছে। চাষিরা পোকামাকড় থেকে এসব গাছ বাঁচাতে বালাইনাশক দিচ্ছেন। সেইসঙ্গে আমের ভালো ফলন হওয়ার আশা করছেন। এজন্য গাছের যত্নে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এই আনন্দের মাঝে ঘন কুয়াশায় মুকুল নষ্টের শঙ্কাও রয়েছে তাদের। যদিও মুকুল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কম বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
চাষিরা বলছেন, গত বছর জেলার গাছগুলোতে মুকুল কম এসেছিল। এবার আগেভাগেই বেশি মুকুল আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে অধিকাংশ গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে মুকুল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, কুয়াশার পর রোদ থাকায় নষ্টের পরিবর্তে মুকুল আরও সতেজ হবে। এজন্য কিছু ছত্রাক জাতীয় কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চাষিদের।
সরেজমিনে কয়েকটি আমবাগান ঘুরে দেখা যায়, বাগানগুলোর অধিকাংশ গাছে মুকুল এসেছে। যেসব গাছে এখনও আসেনি, সেগুলোর বাড়তি যত্ন নিচ্ছেন চাষিরা। এ ছাড়া ফড়িয়ারাও বাগানে বাগানে ঘুরতে শুরু করেছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মুকুল দেখে বাগান কেনা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
তবে আশঙ্কার কথা জানিয়ে চাষিরা বলছেন, আগাম মুকুল আসলে কুয়াশার কবলে পড়ার শঙ্কা বেশি থাকে। ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে মুকুলে ‘পাউডারি মিলডিউ’ নামে এক ধরনের রোগ দেখা দেয়। এতে মুকুল ঝরে পড়ে। যার প্রভাব পড়ে ফলনে। এজন্য কীটনাশক ব্যবহার করছেন কেউ।
এবার আগেভাগেই বেশি মুকুল আসতে শুরু করেছে
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, এ বছর রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোর জেলায় ৯৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে আনুমানিক প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান আছে। গত বছর এই অঞ্চলে মোট ১২ লাখ ৭ হাজার ২৬৩ টন আম উৎপাদন হয়।
বুধপাড়া, পবা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার আমের বাগানগুলোতে আগাম মুকুল এসেছে। এর মধ্যে বুধপাড়া, চারঘাটের নিমপাড়া, ভায়ালক্ষ্মীপুর, চারঘাট সদর, সারদা, শলুয়া এবং বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম, বাউসা, গড়গড়িয়া ইউনিয়নের অনেকের বাগানে মুকুল এসেছে বলে জানান চাষিরা।
বুধপাড়া এলাকার চাষি আয়নাল হক বলেন, ‘এবার আবহাওয়া ভালো। তেমন শীত নেই, কুয়াশাও কম। অনেক সময় কুয়াশার কারণে মুকুলের ক্ষতি হয়। কিন্তু এ বছর সেই ঝুঁকি কম। তাই আশা করছি, গাছে ভালো মুকুল আসবে। বর্তমানে লক্ষণভোগ ও গোপালভোগ জাতের গাছগুলোতে মুকুল দেখা যাচ্ছে।’
সাত বিঘা জমিতে আমের বাগান রয়েছে নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি গ্রামের বাহাদুর রহমানের। তিনি বলেন, ‘গত দুই বছর বাগানে মুকুল আসেনি। ফলে অনেক গাছ কেটে ফেলেছি। এখন যেসব গাছ আছে সেগুলোতে আগেভাগেই মুকুল এসেছে। কুয়াশায় মুকুল নষ্ট না হলে এবার আমের ভালো ফলন হবে।’
অধিকাংশ গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে মুকুল।
মো: গোলাম কিবরিয়া রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি 
















