Dhaka 10:02 pm, Thursday, 6 November 2025

জেলা শিক্ষা অফিসার দূর্নীতি অনিয়ম চাপা দিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা

বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে অফিসে পরিবার নিয়ে বসবাস করার তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য নেয়ার জন্য কয়েক সাংবাদিক ২৭ অক্টোবর তার অফিসে যান। অফিসে গিয়ে দেখতে পান তৃতীয় তলায় ২টি রুম নিয়ে তার পরিবার সহ বসবাস করেন, পাশের অন্য দুটি রুম তার স্টাফদের ভাড়া দেয়ারও প্রমাণ পাওয়া যায়।

এছাড়াও বিভিন্ন সময় নিয়োগ বাণিজ্য, মোটা অংকের কাবিনে বরগুনায় দ্বিতীয় বিবাহ করা, শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী গোলাম কবিরকে মারধর সহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

গত ১১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই বরগুনায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগ বাণিজ্য, অন্যের বউকে তালাক নিয়ে নিজে বিবাহ করা, অফিস সহকারীকে মারধর করে আসছেন।

এসকল বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জসীম উদ্দীনের দ্বিতীয় স্ত্রী নিপা আক্তার সাংবাদিকদের কাছে তথ্য প্রদান করেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৭ অক্টোবর সোমবার জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে যান। অফিসে গিয়ে শিক্ষা অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ করে এ সকল বিষয়ে তার সহযোগিতা কামনা করেন সাংবাদিকগণ। তিনি তার পরিবার নিয়ে অফিসে থাকার কথা স্বীকার করেন এবং সাংবাদিকদের তার বসবাস করার রুমে নিয়ে দেখান। এসময় তিনি নিজে উৎফুল্ল হয়ে সাংবাদিকদের এ সকল দুর্নীতির বিষয় নিউজ করার জন্য অনুরোধও করেন।

এরপরে সাংবাদিকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন পত্রিকায় তার বিষয় সংবাদ প্রকাশ করেন। সংবাদ প্রকাশের পর গত ৩০ অক্টোবর সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। একজন সরকারি কর্মকর্তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক মহল।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির মৃধা ও সাধারণ সম্পাদক তাপস মাহমুদ বলেন…..

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বরগুনা জেলার শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদানের পর দেখা হয় তার সাবেক দ্বিতীয় স্ত্রী নিপা আক্তারের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকেই তার পিছনে লেগে থাকেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা। নিপা আক্তারের স্বামী সিঙ্গাপুর প্রবাসে ছিলো। সেই সুযোগে নিপাকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তার স্বামীকে ডিভোর্স করায়। ডিভোর্স করিয়ে নিপাকে ১০ লক্ষ টাকা কাবিনে বিবাহ করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন।

গত ২৫.০৬.২০২২ তারিখ জেলা শিক্ষা অফিসার জসিম উদ্দিন তার প্রথম স্ত্রী-সন্তানের কথা গোপন রেখে বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লাভলী আক্তার নিপাকে ১০ লক্ষ টাকা কাবিনে বিবাহ করেন। পরবর্তীতে সম্পর্কের অবনতি হলে জসিম উদ্দিনের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপরে পূনরায় জসিম উদ্দিন নিপার সাথে যোগাযোগ করেন এবং তিনি ভুল স্বীকার করে আবারো তাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দেন। পরে ২৮.০৪.২০২৫ ইং তারিখ ৯১ লক্ষ টাকা দেনমোহরের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন। ৯১ লক্ষ টাকা কাবিনের পরেও সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে, যার ফলে ০১.১০.২০২৫ তারিখে কাবিনের টাকা পরিশোধ না করেই তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

এই দ্বিতীয় বিবাহের কথা জসীমউদ্দীনের প্রথম স্ত্রী কে বলে দেয়ায় জেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী গোলাম কবিরকে তুলে নিয়ে গত ১৪ জুলাই ২০২৪ তারিখ মারধর করেন, এঘটনায় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এরপরে জসিম উদ্দিনের প্রথম স্ত্রী মমতাজ বেগম ও জসিম উদ্দিন নিজে এবং তার ড্রাইভার নাসির উদ্দীন সহ নিপার বাড়িতে গিয়ে গালিগালাজ এবং মারধর করেন। মারধর করার পরে নিপা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ০৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে আদালতে মামলা করেন, যা তদন্তনাধীন রয়েছে ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

কমলগঞ্জে শুরু মণিপুরীদের ১৮৩তম মহারাসলীলা উৎসব শুরু

জেলা শিক্ষা অফিসার দূর্নীতি অনিয়ম চাপা দিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা

Update Time : 11:36:19 pm, Tuesday, 4 November 2025

বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে অফিসে পরিবার নিয়ে বসবাস করার তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য নেয়ার জন্য কয়েক সাংবাদিক ২৭ অক্টোবর তার অফিসে যান। অফিসে গিয়ে দেখতে পান তৃতীয় তলায় ২টি রুম নিয়ে তার পরিবার সহ বসবাস করেন, পাশের অন্য দুটি রুম তার স্টাফদের ভাড়া দেয়ারও প্রমাণ পাওয়া যায়।

এছাড়াও বিভিন্ন সময় নিয়োগ বাণিজ্য, মোটা অংকের কাবিনে বরগুনায় দ্বিতীয় বিবাহ করা, শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী গোলাম কবিরকে মারধর সহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

গত ১১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই বরগুনায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগ বাণিজ্য, অন্যের বউকে তালাক নিয়ে নিজে বিবাহ করা, অফিস সহকারীকে মারধর করে আসছেন।

এসকল বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জসীম উদ্দীনের দ্বিতীয় স্ত্রী নিপা আক্তার সাংবাদিকদের কাছে তথ্য প্রদান করেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৭ অক্টোবর সোমবার জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে যান। অফিসে গিয়ে শিক্ষা অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ করে এ সকল বিষয়ে তার সহযোগিতা কামনা করেন সাংবাদিকগণ। তিনি তার পরিবার নিয়ে অফিসে থাকার কথা স্বীকার করেন এবং সাংবাদিকদের তার বসবাস করার রুমে নিয়ে দেখান। এসময় তিনি নিজে উৎফুল্ল হয়ে সাংবাদিকদের এ সকল দুর্নীতির বিষয় নিউজ করার জন্য অনুরোধও করেন।

এরপরে সাংবাদিকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন পত্রিকায় তার বিষয় সংবাদ প্রকাশ করেন। সংবাদ প্রকাশের পর গত ৩০ অক্টোবর সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। একজন সরকারি কর্মকর্তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক মহল।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির মৃধা ও সাধারণ সম্পাদক তাপস মাহমুদ বলেন…..

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বরগুনা জেলার শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদানের পর দেখা হয় তার সাবেক দ্বিতীয় স্ত্রী নিপা আক্তারের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকেই তার পিছনে লেগে থাকেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা। নিপা আক্তারের স্বামী সিঙ্গাপুর প্রবাসে ছিলো। সেই সুযোগে নিপাকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তার স্বামীকে ডিভোর্স করায়। ডিভোর্স করিয়ে নিপাকে ১০ লক্ষ টাকা কাবিনে বিবাহ করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন।

গত ২৫.০৬.২০২২ তারিখ জেলা শিক্ষা অফিসার জসিম উদ্দিন তার প্রথম স্ত্রী-সন্তানের কথা গোপন রেখে বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লাভলী আক্তার নিপাকে ১০ লক্ষ টাকা কাবিনে বিবাহ করেন। পরবর্তীতে সম্পর্কের অবনতি হলে জসিম উদ্দিনের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপরে পূনরায় জসিম উদ্দিন নিপার সাথে যোগাযোগ করেন এবং তিনি ভুল স্বীকার করে আবারো তাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দেন। পরে ২৮.০৪.২০২৫ ইং তারিখ ৯১ লক্ষ টাকা দেনমোহরের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন। ৯১ লক্ষ টাকা কাবিনের পরেও সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে, যার ফলে ০১.১০.২০২৫ তারিখে কাবিনের টাকা পরিশোধ না করেই তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

এই দ্বিতীয় বিবাহের কথা জসীমউদ্দীনের প্রথম স্ত্রী কে বলে দেয়ায় জেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী গোলাম কবিরকে তুলে নিয়ে গত ১৪ জুলাই ২০২৪ তারিখ মারধর করেন, এঘটনায় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এরপরে জসিম উদ্দিনের প্রথম স্ত্রী মমতাজ বেগম ও জসিম উদ্দিন নিজে এবং তার ড্রাইভার নাসির উদ্দীন সহ নিপার বাড়িতে গিয়ে গালিগালাজ এবং মারধর করেন। মারধর করার পরে নিপা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ০৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে আদালতে মামলা করেন, যা তদন্তনাধীন রয়েছে ।