Dhaka 3:25 am, Thursday, 11 September 2025

ঘুষ নেয়ার অভিযোগ সমাজসেবা অফিসারের বিরুদ্ধে

সমাজসেবা অধিদপ্তরের কেপিটেশন সহায়তা হিসেবে দরিদ্র এতিম শিশুদের মানবসম্পদে পরিণত করাই এই আর্থিক সহায়তার প্রধান উদ্দেশ্য। এই অর্থ এতিম শিশুদের প্রতিপালন, চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়, যা তাদের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করে।

মাদ্রাসা বা স্কুলে নিয়ম মেনে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করানো হলে ভর্তিকৃত এতিম ও অসহায় ছাত্র-ছাত্রী ৫০% খরচ মাদ্রাসা কতৃপক্ষ বহন করিবে এবং শর্ত সাপেক্ষে ৫০% ছাত্রদের প্রতিমাসে ছাত্র প্রতি ২০০০ টাকা করে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে দেয়া হবে। যা দিয়ে ওই ছাত্রদের থাকা খাওয়া ও চিকিৎসায় খরচ করা যাবে। কিন্তু বরগুনার আমতলী উপজেলায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ট কয়েটি মাদ্রাসায় ঘুরে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। যেখানে মাদ্রাসায় ৩০ জনের ক্যাপিটিশন পেলে ৬০ জন ছাত্র থাকার কথা সেখানে ৩০ জনই উপস্থিত পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে কয়েটি মাদ্রাসা কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, আমতলী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মঞ্জুরুল কাওসার বিষয়টি জানেন এবং তাকে টাকা দিলে আর কোনো সমস্যা হয় না। অভিযোগ রয়েছে ক্যাপিটিশনের টাকা বছরে ২ কিস্তিতে দেয়া হয়, প্রতিবার টাকা তুলতে গেলে উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকে ১২% টাকা দিতে হয়, অন্যথায় তিনি চেক দেন না। এবং যদি কোন মাদ্রাসায় এতিম সংখ্যা বাড়াতে চায় তাহলে ওই অফিসারকে ৭৫% টাকা দিলেই তা পাশ হয়ে যায় এবং ৭৫% টাকা তাকে আগেই দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মাদ্রাসার সভাপতি বলেন, ১২% টাকা আগে তার টেবিলে রাখা লাগে তারপর তিনি চেকে সই করেন, অন্যথায় চেক পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মঞ্জুরুল কাওসারের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং বিষয়টি সাংবাদিকদের মিথ্যা উদ্দেশ্যপ্রোনোদিত বলে সাংবাদিকদের চাঁদাবাজ বলে গালিগালাজ করেন যা সাংবাদিকদের মানহানিকর।
এ বিষয়ে এশিয়ান টেলিভিশনের বরগুনা জেলা প্রতিনিধি ইত্তিজা মনির বলেন, আমরা বেশকিছু  অভিযোগ পেয়ে আমতলী উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের বক্তব্য নিতে যাই কিন্তু তিনি তার রুমে আমাদের ডুকতে না দিয়ে অন্য রুমে নিয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন যা সাংবাদিকদের জন্য অসম্মানজনক, তিনি উদ্দেশ্যমূলক ভাবে সাংবাদিকদের মানহানি ঘটিয়েছেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা চ্যানেল এ ওয়ানের জেলা প্রতিনিধি জয়নাল আবেদীন রাজু বলেন, তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপজেলা কর্মকর্তা, সমাজসেবা সম্পর্কিত যেকোন বিষয় আমরা তার কাছেই জানতে চাইবো কিন্তু তিনি আমাদের বক্তব্য না দিয়ে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন এবং সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন যা সাংবাদিক সমাজকে উনি অপমানিত করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার কোন সুযোগ নাই, এটি নিশ্চয়ই তিনি খারাপ কাজ করেছেন, ঘুষ নেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো, অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

শ্রীমঙ্গলে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় ফুচকা উদ্ধার, গ্রেফতার ১

ঘুষ নেয়ার অভিযোগ সমাজসেবা অফিসারের বিরুদ্ধে

Update Time : 11:37:36 pm, Tuesday, 9 September 2025

সমাজসেবা অধিদপ্তরের কেপিটেশন সহায়তা হিসেবে দরিদ্র এতিম শিশুদের মানবসম্পদে পরিণত করাই এই আর্থিক সহায়তার প্রধান উদ্দেশ্য। এই অর্থ এতিম শিশুদের প্রতিপালন, চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়, যা তাদের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করে।

মাদ্রাসা বা স্কুলে নিয়ম মেনে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করানো হলে ভর্তিকৃত এতিম ও অসহায় ছাত্র-ছাত্রী ৫০% খরচ মাদ্রাসা কতৃপক্ষ বহন করিবে এবং শর্ত সাপেক্ষে ৫০% ছাত্রদের প্রতিমাসে ছাত্র প্রতি ২০০০ টাকা করে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে দেয়া হবে। যা দিয়ে ওই ছাত্রদের থাকা খাওয়া ও চিকিৎসায় খরচ করা যাবে। কিন্তু বরগুনার আমতলী উপজেলায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ট কয়েটি মাদ্রাসায় ঘুরে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। যেখানে মাদ্রাসায় ৩০ জনের ক্যাপিটিশন পেলে ৬০ জন ছাত্র থাকার কথা সেখানে ৩০ জনই উপস্থিত পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে কয়েটি মাদ্রাসা কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, আমতলী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মঞ্জুরুল কাওসার বিষয়টি জানেন এবং তাকে টাকা দিলে আর কোনো সমস্যা হয় না। অভিযোগ রয়েছে ক্যাপিটিশনের টাকা বছরে ২ কিস্তিতে দেয়া হয়, প্রতিবার টাকা তুলতে গেলে উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকে ১২% টাকা দিতে হয়, অন্যথায় তিনি চেক দেন না। এবং যদি কোন মাদ্রাসায় এতিম সংখ্যা বাড়াতে চায় তাহলে ওই অফিসারকে ৭৫% টাকা দিলেই তা পাশ হয়ে যায় এবং ৭৫% টাকা তাকে আগেই দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মাদ্রাসার সভাপতি বলেন, ১২% টাকা আগে তার টেবিলে রাখা লাগে তারপর তিনি চেকে সই করেন, অন্যথায় চেক পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মঞ্জুরুল কাওসারের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং বিষয়টি সাংবাদিকদের মিথ্যা উদ্দেশ্যপ্রোনোদিত বলে সাংবাদিকদের চাঁদাবাজ বলে গালিগালাজ করেন যা সাংবাদিকদের মানহানিকর।
এ বিষয়ে এশিয়ান টেলিভিশনের বরগুনা জেলা প্রতিনিধি ইত্তিজা মনির বলেন, আমরা বেশকিছু  অভিযোগ পেয়ে আমতলী উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের বক্তব্য নিতে যাই কিন্তু তিনি তার রুমে আমাদের ডুকতে না দিয়ে অন্য রুমে নিয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন যা সাংবাদিকদের জন্য অসম্মানজনক, তিনি উদ্দেশ্যমূলক ভাবে সাংবাদিকদের মানহানি ঘটিয়েছেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা চ্যানেল এ ওয়ানের জেলা প্রতিনিধি জয়নাল আবেদীন রাজু বলেন, তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপজেলা কর্মকর্তা, সমাজসেবা সম্পর্কিত যেকোন বিষয় আমরা তার কাছেই জানতে চাইবো কিন্তু তিনি আমাদের বক্তব্য না দিয়ে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন এবং সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন যা সাংবাদিক সমাজকে উনি অপমানিত করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার কোন সুযোগ নাই, এটি নিশ্চয়ই তিনি খারাপ কাজ করেছেন, ঘুষ নেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো, অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে ।