
নীলফামারীর ডিমলায় চরের জমি দখলের অভিযোগে ভুক্তভোগীগন মানববন্ধন করেছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব খড়িবাড়ী এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে আব্দুল মোতালেব হোসেন পাঞ্চু গং নামে পরিচিত একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে চরের সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি দখলের পাঁয়তারা চালিয়ে আসছে। দলিল জালিয়াতি, হুমকি-ধামকি এবং রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে নিরীহ মানুষকে জিম্মি করে রাখছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।
বক্তারা বলেন, মোতালেব পাঞ্চুর ছেলে ফারুক হোসেন জুলাই আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। সে রাজনৈতিক সুরক্ষা পেয়েই এলাকায় দুঃসাহসী হয়ে ওঠে এবং হামলা-মামলার ভয় দেখিয়ে বহু পরিবারের জমি দখল করে ঘরছাড়া করেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, বারবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেও কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়ায় দখলচেষ্টা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের ভাষ্য “দিনের পর দিন হয়রানি, হুমকি ও চাপের মুখে আমরা নিজেদের জমিতে কাজ করতে পারছি না। আইনের শাসন থাকলে এ ধরনের দুঃসাহস কেউ দেখাতে পারে না।”
এক কৃষক মুসা ভান্ডারী বলেন, “বাপ-দাদার সময়ের জমি। এখন এসে বলে জমি তাদের। কাগজ চাইলে হুমকি দেয়। মামলায় জড়িয়ে ঘরছাড়া করার ভয় দেখায়।”
ভুক্তভোগী সাইজুদ্দিন বলেন, “এই জমিই আমাদের বেঁচে থাকার ভরসা। এটা কেড়ে নিলে আমরা পথে বসে যাবো। তাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো ছাড়া উপায় নেই।”
মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তারা কঠোর ভাষায় বলেন
“জমি দখলের নামে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা বন্ধ না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।”
এ সময় তারা অবিলম্বে প্রশাসনের সরাসরি হস্তক্ষেপ, দখলচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং চরের জমির সুনির্দিষ্ট পরিমাপ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
কর্মসূচিতে উপস্থিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা বলেন, “ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণ মানুষের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।”
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত আব্দুল মোতালেব হোসেন পাঞ্চু কে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেনি।
ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শওকত আলী সরকার বলেন, “আমি সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষ অংশ নিয়ে দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তাদের স্লোগান ছিল- “ভূমিদস্যুদের অত্যাচার বন্ধ করো” “হামলা-মামলা আর নয়” “নিরীহ মানুষের জমি রক্ষা করো”
এলাকাবাসীর আশা, দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার নিশ্চিত হবে। মানুষ যেন আবার নিরাপদে নিজ জমি চাষাবাদ করতে পারে সেই দাবি ভুক্তভোগীগন জানান।
মোঃ আমির হামজা সোহেল, ডিমলা উপজেলা প্রতিনিধি : 


















