ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমিউদ্দিন ও (এসআই) জয়নাল আবদীনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, মিথ্যা মামলা এবং রাজনৈতিক হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন এক ভুক্তভোগী নারী, মোসাম্মৎ মরিয়ম বেগম।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর মরিয়ম বেগমের স্বামী মো. সোহেল চৌধুরী, আখাউড়া সড়ক বাজারের রেলওয়ে জংশনের পাশে অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলে মাসিক ৯ হাজার টাকায় চাকরি করতেন। ওই হোটেলে “অসামাজিক কার্যকলাপ” হচ্ছে—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আখাউড়া থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেন। এবং
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মোহাম্মদ সোহেল চৌধুরীও ছিলেন।
মরিয়ম বেগম দাবি করেন, হোটেলের প্রকৃত মালিককে না পেয়ে তার স্বামীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থানায় উপস্থিত হয়ে তিনি ওসি ছমিউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেন।
তার অভিযোগ, ওসি প্রথমে এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ দিতে অস্বীকার করলে তাকে থানার কনস্টেবল কাউসারের মাধ্যমে গালিগালাজ ও ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে এসআই জয়নাল আবদীন ৫০,০০০ টাকা ঘুষ চেয়ে হুমকি দেন, না দিলে সোহেল চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিস্ফোরণ মামলায় চালান করা হবে।
মরিয়ম বেগম আরও জানান, তার স্বামী এবং পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এমনকি তার স্বামীর বড় ভাই মো. শাহজাহান চৌধুরী নিজেও একজন দীর্ঘদিনের রাজনীতিক ও কারানির্যাতিত নেতা।
শাহজাহান চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, তার ভাই সোহেল চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনা বিস্ফোরণ মামলা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রকৃত অপরাধ যদি থাকত, তাহলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অর্থ বাণিজ্যের কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
মরিয়ম বেগম আরও অভিযোগ করেন, হোটেল মালিককে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হলেও, যারা ঘুষ দিতে পারেনি তাদেরকে ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বিস্ফোরণ মামলার বাদী মোহাম্মদ শাকিল, যিনি তার স্বামীর ভাগিনা, এই সম্পর্কটি জানার পরও পুলিশ কর্মকর্তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে গালিগালাজ করেন।
তার দাবি, বিস্ফোরণ মামলার মূল এজাহারে তার স্বামীর নাম না থাকলেও, তাকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, আখাউড়া থানা বর্তমানে সাধারণ মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে, যেখানে ঘুষ ও মামলা বাণিজ্য একটি নিয়মিত ঘটনা।
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ ও অনুলিপি প্রেরণ করেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বরাবর ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগম,, বাংলাদেশ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আখাউড়া থানার ওসি ও এসআই-এর বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এবং তিনি নিম্নলিখিত দপ্তরসমূহে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
১. অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক (অপরাধ শাখা), বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর, ঢাকা।
২. উপ মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি), চট্টগ্রাম রেঞ্জ।
৩. অতিরিক্ত ডিআইজি (অপরাধ শাখা), সিকিউরিটি সেল, চট্টগ্রাম।
৪. পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
অবশেষে
মরিয়ম বেগম বলেন, "আমি কখনোই চাইনি এই ঘটনা মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসুক। কিন্তু প্রশাসনের অবহেলা এবং বারবার ঘুষ চাওয়ার পর বাধ্য হয়ে আমি বাংলাদেশের একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেছি। আমি আমার স্বামীর মুক্তি এবং প্রকৃত ঘটনার তদন্ত করে বিচার দাবি করছি, যাতে ভবিষ্যতে কোনো নিরীহ মানুষ এভাবে হয়রানির শিকার না হয়।"
এ বিষয়ে সংবাদ কর্মীরা সঠিক তথ্য জানার জন্য, আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ ওসি ছমিউদ্দীন এর সাথে মটো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সময় সে আওয়ামী লীগ নেতাদের পৃষ্ঠপোষক ছিল,এবং বৈষম্য আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের এদেরকে টাকা পয়সা দিত, এবং তার উৎস হচ্ছে এখানে সে ১২-১৩ বছরের মেয়েদেরকে নিয়ে ব্যবসা করে এক একটা ৩০০ টাকা করে বাজেট নেওয়া হয়। এটা আমরা অনেকবার চেষ্টা করেছি বন্ধ করার জন্য কিন্তু আমরা পারিনা, এছাড়া সে পুলিশের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আকাম কুকাম করে লোকজনকে ভয়বৃতি দেখায় এবং চিন্তাই করে,পরে আমাদের সার্কেল মহোদয় সহ তাকে এরেস্ট করে, এবং তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ আছে, ৫ ই আগস্টে এ আন্দোলনের মধ্যে তার রোল ছিল, সে অর্থ আদান-প্রদানে তাদের সাথে সেই ভূমিকা ছিল, এজন্য তাকে ৫ ই আগস্টের মামলায় এজহারভুক্ত করা হয়েছে।