বরগুনায় বিকাশ প্রতারণা চক্রের সক্রিয় তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের যৌথ টিম।
পুলিশ জানায়, গত এক মাস ধরে বরগুনা জেলার বিভিন্ন উপজেলার সাধারণ মানুষ বিকাশ প্রতারণার শিকার হওয়ার অভিযোগে পুলিশ সুপার বরগুনা ও জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলে অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন।
অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল মামুন শিকদার এর নির্দেশনায় জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বরগুনার আমতলী উপজেলার উত্তর টিয়াখালী এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো. সুজন (পিতা: মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার), সাং—দেবপুর, কলাপাড়া, পটুয়াখালী, আব্দুর রহমান (২৫) (পিতা: মো. দেলোয়ার মুন্সী), উত্তর টিয়াখালী, আমতলী, বরগুনা, সুমি (২২) (স্বামী: আব্দুর রহমান), উত্তর টিয়াখালী, আমতলী, বরগুনা।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে যে, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ মানুষকে ফোন করে আত্মীয়-স্বজনের অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতো। তাদের কাছ থেকে বিকাশ প্রতারণায় ব্যবহৃত ৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ঘটনায় প্রতারণার শিকার ব্যক্তি মো. রাকিবুল খান (২৫), পিতা—মো. আলতাফ হোসেন, মাতা—লাইজু বেগম, সাং—গাজীপুর, আঠারগাছিয়া, আমতলী, বরগুনা; তিনি জানান, প্রতারকরা তার বড় ভাই রাসেল খান (২৭), যিনি প্রায় তিন বছর ধরে দুবাই প্রবাসে আছেন, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে—এমন কথা বলে টাকা চান। তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রতারকদের বিকাশ নম্বরে মোট ৩৮ হাজার টাকা প্রেরণ করেন।
ঘটনার পর ভুক্তভোগী আমতলী থানায় একটি মামলা (নং–০৭, তাং–০৫/১০/২০২৫, ধারা–৪০৬/৪২০ পেনাল কোড) দায়ের করেন।
জেলা পুলিশের তদন্তে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং তাদের বিরুদ্ধে বরগুনা ও অন্যান্য জেলায় একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে।
জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ইনচার্জ জানান, “অভিযানে উদ্ধারকৃত তথ্যের ভিত্তিতে চক্রটির অন্যান্য সদস্যদেরও শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”