
শেখ আব্দুর রাজ্জাক,রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি:
গোয়ালন্দে অতি ধীরগতিতে চলছে গ্রামীণ সড়কের কাজ, চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ঐ এলাকাবাসীর।সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া তোরাপ শেখের পাড়া, যদু ফকির পাড়া ও সোনাউল্লা ফকির পাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন একটি রাস্তার কাজ অতি ধীরগতিতে চলছে। ফলে ঐ এলাকার জনসাধারণ কে দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সাধারণ চলাচল, রোগীদের গমন, কৃষি ফসল বাজারে নেয়ার ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। এই সড়কে চলাচলের ভোগান্তি সমন্ধে জানতে চাইলে সোনাউল্লা পাড়ার আব্দুল, সবুজ, জিয়া, মোস্তফা মহিন, সহ অনেক লোকজন বলেন, এই রাস্তায় চলাচল করা বর্তমান দুস্কর হয়ে গেছে এবং আমাদের কঠিন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তারা আরো বলেন এই রাস্তায় কাজ অতি তারাতাড়ি শেষ করার দাবীতে গত মঙ্গলবার মানববন্ধন করেছে এলাকা বাসী। এবং দ্রুত রাস্তাটিতে যান চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন।উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সংলগ্ন সড়ক হতে উজানচর জিসি ভায়া ফকির পাড়া সড়কটির ২ কিঃ ৬৮৫ মিটার বিটুমিনাস কার্পেটিং কাজ করার জন্য চুয়াডাঙ্গার জাকাউল্লাহ এন্ড ব্রাদার্স প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ পায়। ২টি বক্স কালভার্টসহ সড়কটি নির্মানের চুক্তিমূল্য ৩ কোটি ৭৪ লক্ষ ৭ হাজার ২৫৪ টাকা। গত ১৮-১০-‘২৪ তারিখ শুরু হয়ে আগামি ১৬-৫-‘২৫ তারিখের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু সড়কটির কাজের ধীরগতির কারণে তা যথা সময়ে সম্পন্ন হবে কিনা তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।তোরাপ শেখের পাড়ার কৃষক হুমায়ন আহমেদ, বারেক বেপারী, কুদ্দুস শেখ, খবির দেওয়ান, মমিন,সহ বেশ কয়েকজন বলেন, তাদের এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ, রসুন, কুমড়োসহ নানা ধরনের ফসলের চাষ হয়েছে। এ সকল ফসল অল্প কিছু করে অনেক কষ্ট করে ঘোড়ার গাড়িতে ঠেলে বাজারে নেয়া হচ্ছে। তারা জানান, ঘোড়ার গাড়িতে প্রতি মন পেঁয়াজ নিতে ১’শ টাকা করে ভাড়া দিতে হচ্ছে। আগে লাগত মাত্র ৩০ টাকা। এ অবস্থায় উত্তোলন খরচ ও পরিবহন খরচের পেছনে পেঁয়াজ বিক্রির অধিকাংশ টাকাই ব্যায় হয়ে যাচ্ছে। এভাবে তারা লোকসানের মুখে পড়ছেন। এই খারাপ হওয়ার কারণে পেঁয়াজ বাজারে নেওয়া কষ্ট হচ্ছে এ জন্য অনেকের পাকা পেঁয়াজ মাঠেই নষ্ট হচ্ছে।যদু ফকির পাড়ার কৃষক হারুন বেপারি বলেন, মাঠের সব পেঁয়াজ ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেকে গেছে। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে পেঁয়াজ ঠিক মতো বাজারে নিতে পারছেন না। মাথায় করে আর পেয়াজ বাজারে নেয়া অনেক কঠিন হয়ে গেছে। অন্ত¡সত্ত্বা নারী সুমী আক্তার আশংকা প্রকাশ করে বলেন, তার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। রাত বেরাতে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। রাস্তাটা ভালো থাকলে তেমন একটা ভয় পেতাম না। বালুর মধ্য দিয়ে সাধারণ লোকজন ও রোগীদের চলাচলেও বর্তমানে খুবই কস্ট হচ্ছে বলে তিনি জানান। গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. খোকন উজ্জামান বলেন, ওই এলাকার সাধারণ কৃষক জনসাধারণের দুর্ভোগের বিষয়টি চিন্তা করে উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে দ্রুত কাজটি সম্পন্নের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। ঠিকাদারের প্রতিনিধি মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটা সত্য। তবে বেশি তাড়াহুড়ো করে কাজ করলে কাজের মান খারাপ হতে পারে। তাছাড়া বালু রুলিং করার জন্য রোলার মেশিন জোগার করতে সমস্যা হচ্ছে।গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাকির হোসেন মিয়া জানান, রাস্তাটির কাজের মাত্র ৩০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে, কাজের গতিও অতি ধীর। পুরোনো রাস্তার উপর হতে ইট তুলে ফেলে বালি বিছিয়ে দেয়াতে বর্তমানে সেখান দিয়ে কোন যানবাহনই চলাচল করতে পারছে না। এতে করে জনসাধারণের ভোগান্তি হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। তিনি আরও জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে সতর্কতামূলক একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে অতি দ্রুত কাজের গতি বাড়িয়ে অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য। যাতে করে ঐ এলাকার লোকজন যানবাহন সহ বিভিন্ন প্রকার মালামাল বাজারজাত করতে পারে ।
ছবি সংযুক্ত ঃরাস্তার কাজে বালু বিছিয়ে রেখে ধীরগতিতে কাজ চলছে। ছবি গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়ন তোরাপ শেখের পাড়া ও যদু ফকির পাড়া এলাকায় তোলা।