কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তে আবারও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার রাতে বালুখালী সীমান্তের পিলার বিডি-২১ সংলগ্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হয় ২ লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট। তবে অভিযানে জড়িত চোরাকারবারিরা মিয়ানমারের দিকে পালিয়ে যায়।
বিজিবি ৬৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বুধবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন
বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, রাতভর বিশেষ টহলের সময় ১০–১২ জনকে সীমান্ত অতিক্রম করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে অন্তত ৬–৭ জন পরিচিত চোরাকারবারি বলে শনাক্ত করা হয়। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা প্রদর্শন করে পালানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে খালে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে মিয়ানমারের ভেতরে প্রবেশ করে।
পরে খালপাড় থেকে সাদা পলিথিনে মোড়ানো দুটি প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। যার ভেতরে পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা।
বিজিবির দাবি, পালিয়ে যাওয়া চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তবে স্থানীয় সূত্র বলছে, সীমান্ত এলাকায় বছরের পর বছর একই ব্যক্তিরা সক্রিয় থাকলেও তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। প্রশ্ন উঠছে—এদের পেছনে কারা আসল শক্তি হিসেবে কাজ করছে
উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তকে এখন দেশের সবচেয়ে বড় ইয়াবা প্রবেশদ্বার হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একাধিক গোপন কারখানা থেকে নিয়মিতভাবে ইয়াবা বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। এই পাচারকাজে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি অংশের সম্পৃক্ততার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে উঠে আসছে। কিন্তু আইনের জালে ধরা পড়ছে মূলত ক্ষুদ্র বাহকরা, আর বড় সিন্ডিকেটের হোতারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল জসীম উদ্দিন বলেন, “চোরাকারবারিরা নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছে। আমরা সতর্ক আছি এবং অভিযান অব্যাহত থাকবে। ইয়াবা জব্দের পাশাপাশি চক্রের মূল হোতাদের ধরতে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।”
স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় প্রতিদিনই সীমান্তে ইয়াবা ধরা পড়ছে। কিন্তু একই এলাকাতেই বারবার একই ধরণের ঘটনা ঘটছে। তাহলে কি চোরাকারবারিদের পেছনে কোনো অদৃশ্য শক্তি সক্রিয়? তাদের মতে, যতক্ষণ না বড় মাপের হোতাদের আইনের আওতায় আনা যায়, ততদিন ইয়াবা প্রতিরোধ কেবল ‘প্যাকেট জব্দের’ মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।