
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানাধীন বন্দরপাড়া নামক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভুয়া পুলিশ পরিচয় ও অর্থের বিনিময়ে সেনাবাহিনী তে চাকুরী দেয়ার নামে প্রতারক চক্রের মূলহোতা মোঃ রাজিউর রহমান (৪০), পিতা-সইফুর রহমান, সাং-জনগাঁও, থানা-পীরগঞ্জ, জেলা-ঠাকুরগাঁও‘কে গ্রেফতার করেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম সেনাবাহিনীর চাকুরীতে ভর্তি হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করলে নিকটস্থ আত্মীয় মাধ্যমে জানতে পারে যে, বিবাদী মোঃ রাজিউর ইসলাম নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে টাকার মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারী চাকুরী নিয়ে দেয়। তখন বিবাদী রাজিউর এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঠাকুরগাঁও জেলাতে এসআই হিসেবে কর্মরত আছে বলে জানায়। ভিকটিম তার কাছে চাকুরীর বিষয়ে কথা বললে সে বহু লোককে সেনাবাহিনীতে চাকুরী দিয়েছে এবং তাকেও ভর্তি করে দিবে বলে ১২ লক্ষ টাকার চুক্তিবদ্ধ হয়। চাকুরী হলে প্রথমে ৬ লক্ষ টাকা এবং পরবর্তীতে এ্যাপয়নমেন্ট কার্ড হাতে পাওয়ার পরে বাকী ৬ লক্ষ টাকা দিতে হবে মর্মে চুক্তি হয়।
গত ইং-৩১-০৫-২০২৫ তারিখ ভিকটিম মোবাইলে সেনাবাহিনীর মাঠে উপস্থিত হওয়ার জন্য এসএমএস এর কথা বিবাদীকে জানায়। গত ০২-০৬-২০২৫ তারিখ বিবাদী ভিকটিমের সকল সার্টিফিকেট এবং জনতা ব্যাংকের ০২ টি ব্লাংক চেক স্বাক্ষর করে ঠাকুরগাঁও সদর ঠিকানায় পাঠাতে বললে ভিকটিম তার কথা মত ০২টি ব্লাংক চেক, মূল এসএসসি সার্টিফিকেট সহ মূল্যবান কাগজপত্র ও ০৬ টি নন-জুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্প এসএ পরিবহণে কুরিয়র এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়। সকাল ০৭.৩০ ঘটিকার সময় রাজশাহী সেনানিবাসে সৈনিক পদে নিয়োগের মাঠ আছে বলে জানায় এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলে। কিন্তু উক্ত ভিকটিম রাজশাহী সেনানিবাসে সৈনিক পদে নিয়োগে প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়ে। তখন বিবাদীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় প্রতারণা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
উক্ত ঘটনায় পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যায় র্যাবও ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামীকে গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। ইং ১২-০৭-২০২৫ তারিখ ১৯.৩০ ঘটিকায় র্যাব-৫, সিপিএসসি ও র্যাব-১৩, সিপিসি-১ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল তদন্তকারী কর্মকর্তার অধিযাচনপত্রের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানাধীন বন্দরপাড়া নামক এলাকা হতে উক্ত সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্রের মূলহোতা ও পরিকল্পনাকারীকে আটক করে ।
প্রাথমিক তদন্তে উক্ত প্রতারণার সত্যতা পাওয়া গেছে এবং উক্ত প্রতারক নিজেকে পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে এর আগেও বহুবার মানুষ কে প্রতারণা করে এসেছে। এভাবে সে অনেকের সার্টিফিকেট জালিয়াতি, আত্মসাত করার মাধ্যমে ব্লাকমেইল এর সাথে জড়িত ছিলো। মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ভিকটিমের নিকট হতে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে এলাকার নিরীহ লোকজনকে নিঃস্ব করেছে মর্মে জানা যায়। তাছাড়া পূর্বে উক্ত আসামীর নামে একাধিক প্রতারণা আইনে মামলা রয়েছে এবং একাধিকবার জেলে গেছে।
উক্ত আসামীকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানায় হস্তান্তর করা রয়েছে।
আবুল হাসেম, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধিঃ 
















