Dhaka 11:56 pm, Monday, 7 July 2025

রাজশাহীতে আরএমপি পুলিশের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আনান্দ র‍্যালি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আরএমপি সদর দপ্তরে পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি।

বিশেষ অতিথি ছিলেন সারদা পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যাল অতিরিক্ত আইজিপি মীর রেজাউল আলম, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, জেলা পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, র‍‍্যাব -৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাসুদ পারভেজসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সুধীজন। পরে আয়োজিত হয় একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি, কেক কাটা এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা। সভায় আরএমপির ৩৩ বছরের সাফল্যগাথা তুলে ধরে ভবিষ্যতে জনগণের কল্যাণে আরও নিবেদিতভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।

পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, “১৯৯২ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করে আরএমপি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে এটি একটি আধুনিক, সুসংগঠিত ও স্বনির্ভর ইউনিটে পরিণত হয়েছে।” শুরুতে মাত্র ৯২ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৪টি থানা নিয়ে গঠিত আরএমপির আওতা এখন ৪৭২ বর্গকিলোমিটারে বিস্তৃত। বর্তমানে এর অধীনে রয়েছে ১২টি থানা-বোয়ালিয়া মডেল, রাজপাড়া, চন্দ্রিমা, মতিহার, কাঁটাখালী, বেলপুকুর, শাহ মখদুম, এয়ারপোর্ট, পবা, কাশিয়াডাঙ্গা, দামকুড়া ও কর্ণহার। এছাড়াও রয়েছে ১২টি পুলিশ ফাঁড়ি ও ৩টি বিশেষ পুলিশের দল। ইউনিটটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ৪টি অপরাধ বিভাগ-বোয়ালিয়া, কাশিয়াডাঙ্গা, শাহ মখদুম ও মতিহার-এর মাধ্যমে।

আরএমপির অধীনে রয়েছে সিটিএসবি (কাউন্টার টেরোরিজম), দাঙ্গা দমন বিভাগ, ট্রাফিক বিভাগ, গোয়েন্দা শাখা, প্রসিকিউশন, এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, কল্যাণ শাখা এবং ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার। শুরুর সময় জনবল ছিল ১,১৩৫ জন, বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৩,৪১৪ জনে। জনবল বৃদ্ধি ও কাঠামোগত সম্প্রসারণের মাধ্যমে আরএমপি আজ একটি সক্ষম ও কার্যকর বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।

কমিশনার আরও বলেন, “রাজশাহী শহর পরিচ্ছন্নতা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও শিক্ষানগরী হিসেবে যে মর্যাদা পেয়েছে, তাতে আরএমপির অবদান অপরিসীম। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি নাগরিক সেবা দিয়ে এ বাহিনী নগরবাসীর আস্থা অর্জন করেছে।

উল্লেখ্য, ১৭৭২ সালে রাজশাহী জেলা গঠনের পর ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী পৌরসভা, যা ১৯৯১ সালে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হয়। আর এই কর্পোরেশন অঞ্চলকে ঘিরেই ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করে আরএমপি। আজ আরএমপি শুধুই একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, বরং রাজশাহীর গর্ব ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকারী একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ডিমলায় রাস্তার কাজ পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

রাজশাহীতে আরএমপি পুলিশের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

Update Time : 05:16:28 pm, Tuesday, 1 July 2025

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আনান্দ র‍্যালি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আরএমপি সদর দপ্তরে পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি।

বিশেষ অতিথি ছিলেন সারদা পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যাল অতিরিক্ত আইজিপি মীর রেজাউল আলম, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, জেলা পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, র‍‍্যাব -৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাসুদ পারভেজসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সুধীজন। পরে আয়োজিত হয় একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি, কেক কাটা এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা। সভায় আরএমপির ৩৩ বছরের সাফল্যগাথা তুলে ধরে ভবিষ্যতে জনগণের কল্যাণে আরও নিবেদিতভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।

পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, “১৯৯২ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করে আরএমপি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে এটি একটি আধুনিক, সুসংগঠিত ও স্বনির্ভর ইউনিটে পরিণত হয়েছে।” শুরুতে মাত্র ৯২ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৪টি থানা নিয়ে গঠিত আরএমপির আওতা এখন ৪৭২ বর্গকিলোমিটারে বিস্তৃত। বর্তমানে এর অধীনে রয়েছে ১২টি থানা-বোয়ালিয়া মডেল, রাজপাড়া, চন্দ্রিমা, মতিহার, কাঁটাখালী, বেলপুকুর, শাহ মখদুম, এয়ারপোর্ট, পবা, কাশিয়াডাঙ্গা, দামকুড়া ও কর্ণহার। এছাড়াও রয়েছে ১২টি পুলিশ ফাঁড়ি ও ৩টি বিশেষ পুলিশের দল। ইউনিটটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ৪টি অপরাধ বিভাগ-বোয়ালিয়া, কাশিয়াডাঙ্গা, শাহ মখদুম ও মতিহার-এর মাধ্যমে।

আরএমপির অধীনে রয়েছে সিটিএসবি (কাউন্টার টেরোরিজম), দাঙ্গা দমন বিভাগ, ট্রাফিক বিভাগ, গোয়েন্দা শাখা, প্রসিকিউশন, এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, কল্যাণ শাখা এবং ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার। শুরুর সময় জনবল ছিল ১,১৩৫ জন, বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৩,৪১৪ জনে। জনবল বৃদ্ধি ও কাঠামোগত সম্প্রসারণের মাধ্যমে আরএমপি আজ একটি সক্ষম ও কার্যকর বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।

কমিশনার আরও বলেন, “রাজশাহী শহর পরিচ্ছন্নতা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও শিক্ষানগরী হিসেবে যে মর্যাদা পেয়েছে, তাতে আরএমপির অবদান অপরিসীম। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি নাগরিক সেবা দিয়ে এ বাহিনী নগরবাসীর আস্থা অর্জন করেছে।

উল্লেখ্য, ১৭৭২ সালে রাজশাহী জেলা গঠনের পর ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী পৌরসভা, যা ১৯৯১ সালে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হয়। আর এই কর্পোরেশন অঞ্চলকে ঘিরেই ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করে আরএমপি। আজ আরএমপি শুধুই একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, বরং রাজশাহীর গর্ব ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকারী একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান।