Dhaka 7:21 am, Friday, 18 July 2025

বাঘায় পড়াশোনা না পারায় শিক্ষকের বেধড়ক মার, পঙ্গু প্রায় শিশু শিক্ষার্থী

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী কাসেমুল উলূম ক্বওমী মাদ্রাসায় শিক্ষকের বেদম প্রহারে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মোঃ আব্দুল রহমান গুরুতর আহত হয়ে প্রায় পঙ্গুত্ববরণ করেছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে তার জরুরি অপারেশন প্রয়োজন, যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা।

আব্দুল রহমান উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের চক-বাউসা গ্রামের কৃষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং মক্তবশ্রেণীর শিক্ষার্থী। গত ৩ মে মাদ্রাসা থেকে ফোন পেয়ে তার বাবা আড়ানী বাজারের একটি ফার্মেসিতে ছুটে যান। সেখানে ছেলেকে অজ্ঞান ও হাত-পা বাঁকা অবস্থায় দেখতে পান তিনি। প্রথমে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্য না দিলেও পরে স্বীকার করে, শ্রেণি শিক্ষক বেলাল ক্বারী পড়া না পারার কারণে তাকে মারধর করেন।

প্রথমে পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, অতিরিক্ত মারধরের ফলে সে কোমায় চলে গিয়েছিল। পরবর্তীতে রাজশাহী ও ঢাকার পপুলার হাসপাতালে বিশেষজ্ঞরা জানান, তার ঘাড়ের একটি স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করছে এবং ধীরে ধীরে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। জরুরি অপারেশন ছাড়া তার স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সম্ভাবনা নেই।

অসহায় কৃষক পিতা জাহাঙ্গীর আলম জানান, চিকিৎসা ব্যয় বহন করার মতো সামর্থ্য তার নেই। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের সহযোগিতা না করে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে।

এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা এমন নৃশংস ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও মাদ্রাসা নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বরেন্দ্র সচেতন সমাজ’র উদ্যোগে মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন

বাঘায় পড়াশোনা না পারায় শিক্ষকের বেধড়ক মার, পঙ্গু প্রায় শিশু শিক্ষার্থী

Update Time : 07:24:54 pm, Monday, 30 June 2025

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী কাসেমুল উলূম ক্বওমী মাদ্রাসায় শিক্ষকের বেদম প্রহারে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মোঃ আব্দুল রহমান গুরুতর আহত হয়ে প্রায় পঙ্গুত্ববরণ করেছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে তার জরুরি অপারেশন প্রয়োজন, যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা।

আব্দুল রহমান উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের চক-বাউসা গ্রামের কৃষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং মক্তবশ্রেণীর শিক্ষার্থী। গত ৩ মে মাদ্রাসা থেকে ফোন পেয়ে তার বাবা আড়ানী বাজারের একটি ফার্মেসিতে ছুটে যান। সেখানে ছেলেকে অজ্ঞান ও হাত-পা বাঁকা অবস্থায় দেখতে পান তিনি। প্রথমে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্য না দিলেও পরে স্বীকার করে, শ্রেণি শিক্ষক বেলাল ক্বারী পড়া না পারার কারণে তাকে মারধর করেন।

প্রথমে পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, অতিরিক্ত মারধরের ফলে সে কোমায় চলে গিয়েছিল। পরবর্তীতে রাজশাহী ও ঢাকার পপুলার হাসপাতালে বিশেষজ্ঞরা জানান, তার ঘাড়ের একটি স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করছে এবং ধীরে ধীরে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। জরুরি অপারেশন ছাড়া তার স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সম্ভাবনা নেই।

অসহায় কৃষক পিতা জাহাঙ্গীর আলম জানান, চিকিৎসা ব্যয় বহন করার মতো সামর্থ্য তার নেই। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের সহযোগিতা না করে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে।

এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা এমন নৃশংস ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও মাদ্রাসা নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।