Dhaka 6:56 am, Friday, 18 July 2025

হাতুড়ির টুংটাং আওয়াজে ব্যস্ত সময় পার করছে গোয়ালন্দের কামার পাড়া

মুসলমান সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ত্যাগের ধর্মীয় অনুষ্ঠান গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্র ঈদ উল-আযহা (কোরবানির ঈদ)। সবচেয়ে বড় আয়োজন ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ঈদ উল-আযাহা উদযাপন করা হয়।এবারের ঈদ উল আযহা’র আর মাত্র ৯দিন বাকি আছে।

আগত মুসলমান সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ত্যাগের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদ-উল আযহার আনন্দ যেন সকলের দুয়ারে করা নাড়ছে। আর এই ঈদকে সামনে রেখে কোরবানির পশু জবাই করার জন্য
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কামাল পল্লীতে চলচলছে অন্যতম দেশীয় উপকরণ ছুরি, চাকু,চাপাতি দা, বটি, শান দেওয়া সহ লোহার তৈরি বিভিন্ন প্রকার সামগ্রী চাহিদা বেড়েছে ‌‌। এসব তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পেশাদারিত্ব কামার সম্প্রদায়ের শ্রমিকেরা। তাঁরা যেন দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন না।

জানা গেছে, বিশেষ করে কোরবানির ঈদ আসলে চাকু,ছুরি,চাপাতি,দা,বটি বেশি দরকার পড়ে পাশাপাশি ধান কাটার মৌসুম চলছে এ সময় নতুন কাঁচি বানানো এবং পুরাতন কাঁচির ধার কাটানো।

এসব তৈরি করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন এলাকার কামার সম্প্রদায়ের শ্রমিকেরা। কামারপাড়ায় দিন রাত টুংটাং শব্দের মুখরিত হয়ে ওঠে আশেপাশের এলাকা। এ বছরও তাঁর কোন অংশে ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে এ বছর গত বছরের তুলনায় বেঁচা বিক্রি অনেকটাই কম বলে জানান, গোয়ালন্দের কামার সম্প্রদায়ের এক শ্রমিক কৃষ্ণ সরকার।

মেশিনের তৈরি লোহার যন্ত্রপাতি দেখতে অনেক সুন্দর ও অনেক ধারালো হয়। দাম ও সময় অপেক্ষাকৃত অনেক কম লাগে। তাই কামার সম্প্রদায়ের জিনিসের চেয়ে মেশিনের তৈরি চাকু,
ছুরি,চাপাতি,দা,বটি বিভিন্ন সামগ্রীর কদর ক্রমেই বাড়ছে। বাপ দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে মূলত কিছু কামার সম্প্রদায়ের লোক এখনো সেই পেশায় জড়িয়ে আছেন বলে প্রকৃত পক্ষের কামাররা জানান।

তাঁরা বলেন,অন্যান্য শ্রমিকদের তুলনায় এই পেশায় সাধারণত আয় ও মানসম্মত উভয় কম। তাই আমাদের অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।

লোহার কর্মকার শ্রী কৃষ্ণ সরকার জানান, এক সময় তাঁদের বেশ কদর ছিল বর্তমানে তা আর নেই। এখন আমাদের হাতের তৈরি জিনিসের কদর কমে গেছে। তাই সারা বছর কোন কাজ থাকেনা। কুরবানীর ঈদ ও ধান,পাট কাটার মৌসুমে আমাদের কাজের চাহিদা একটু বেড়ে যায়।

এ সময় তাঁদের দৈনিক ১,০০০/- টাকা থেকে ১৫০০/- টাকা পর্যন্ত আয় হয়। খরচ বাদে তাঁদের হাতে থাকে ৫০০/- টাকা থেকে ৬০০/- টাকার মত।

সরজমিনে জেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজবাড়ী সদর, বালিয়াকান্দি, পাংশা, কালুখালী, ও গোয়ালন্দ বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারে বেশ কিছু কামার সম্প্রদায়ের দোকান আছে ।

কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে পেশাদার এসব কামার সম্প্রদায়ের লোকেরা লোহা কিনে সেই গুলাকে আগুনে পুড়িয়ে চাকু,ছুরি,চাপাতি,দা বঁটি সহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করছেন।

কামার সম্প্রদায়ের লোকেরা এইসব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মৌসুমী চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকেন বলে জানা গেছে।

অনেক ক্রেতা জানান, গত বছরের তুলনায় লোহার দাম এই বছর অনেক বেশি হওয়া লোহার তৈরি সরঞ্জামাদির দাম অনেক বেড়েছে ভালো মানের লোহার ইস্পাতের তৈরি

চাপাতির দাম ৮০০/- টাকা থেকে ৯০০/-টাকা কেজি , ইস্পাতের তৈরি ছুরি (ছোট)১৫০ টাকা, লোহার ইস্পাতের তৈরি দা ১,০০০ কেজি টাকা, লোহার ইস্পাতের তৈরি বটি ১,০০০ টাকা কেজী পর্যন্ত বেচা কেনা হচ্ছে। কামারা বলছেন লোহার দাম ও মজুরি বৃদ্ধি হওয়ায় লোহার ইস্পাতের তৈরি সরঞ্জামাদির দাম একটু বেশি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বরেন্দ্র সচেতন সমাজ’র উদ্যোগে মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন

হাতুড়ির টুংটাং আওয়াজে ব্যস্ত সময় পার করছে গোয়ালন্দের কামার পাড়া

Update Time : 01:52:12 pm, Wednesday, 28 May 2025

মুসলমান সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ত্যাগের ধর্মীয় অনুষ্ঠান গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্র ঈদ উল-আযহা (কোরবানির ঈদ)। সবচেয়ে বড় আয়োজন ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ঈদ উল-আযাহা উদযাপন করা হয়।এবারের ঈদ উল আযহা’র আর মাত্র ৯দিন বাকি আছে।

আগত মুসলমান সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ত্যাগের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদ-উল আযহার আনন্দ যেন সকলের দুয়ারে করা নাড়ছে। আর এই ঈদকে সামনে রেখে কোরবানির পশু জবাই করার জন্য
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কামাল পল্লীতে চলচলছে অন্যতম দেশীয় উপকরণ ছুরি, চাকু,চাপাতি দা, বটি, শান দেওয়া সহ লোহার তৈরি বিভিন্ন প্রকার সামগ্রী চাহিদা বেড়েছে ‌‌। এসব তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পেশাদারিত্ব কামার সম্প্রদায়ের শ্রমিকেরা। তাঁরা যেন দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন না।

জানা গেছে, বিশেষ করে কোরবানির ঈদ আসলে চাকু,ছুরি,চাপাতি,দা,বটি বেশি দরকার পড়ে পাশাপাশি ধান কাটার মৌসুম চলছে এ সময় নতুন কাঁচি বানানো এবং পুরাতন কাঁচির ধার কাটানো।

এসব তৈরি করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন এলাকার কামার সম্প্রদায়ের শ্রমিকেরা। কামারপাড়ায় দিন রাত টুংটাং শব্দের মুখরিত হয়ে ওঠে আশেপাশের এলাকা। এ বছরও তাঁর কোন অংশে ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে এ বছর গত বছরের তুলনায় বেঁচা বিক্রি অনেকটাই কম বলে জানান, গোয়ালন্দের কামার সম্প্রদায়ের এক শ্রমিক কৃষ্ণ সরকার।

মেশিনের তৈরি লোহার যন্ত্রপাতি দেখতে অনেক সুন্দর ও অনেক ধারালো হয়। দাম ও সময় অপেক্ষাকৃত অনেক কম লাগে। তাই কামার সম্প্রদায়ের জিনিসের চেয়ে মেশিনের তৈরি চাকু,
ছুরি,চাপাতি,দা,বটি বিভিন্ন সামগ্রীর কদর ক্রমেই বাড়ছে। বাপ দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে মূলত কিছু কামার সম্প্রদায়ের লোক এখনো সেই পেশায় জড়িয়ে আছেন বলে প্রকৃত পক্ষের কামাররা জানান।

তাঁরা বলেন,অন্যান্য শ্রমিকদের তুলনায় এই পেশায় সাধারণত আয় ও মানসম্মত উভয় কম। তাই আমাদের অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।

লোহার কর্মকার শ্রী কৃষ্ণ সরকার জানান, এক সময় তাঁদের বেশ কদর ছিল বর্তমানে তা আর নেই। এখন আমাদের হাতের তৈরি জিনিসের কদর কমে গেছে। তাই সারা বছর কোন কাজ থাকেনা। কুরবানীর ঈদ ও ধান,পাট কাটার মৌসুমে আমাদের কাজের চাহিদা একটু বেড়ে যায়।

এ সময় তাঁদের দৈনিক ১,০০০/- টাকা থেকে ১৫০০/- টাকা পর্যন্ত আয় হয়। খরচ বাদে তাঁদের হাতে থাকে ৫০০/- টাকা থেকে ৬০০/- টাকার মত।

সরজমিনে জেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজবাড়ী সদর, বালিয়াকান্দি, পাংশা, কালুখালী, ও গোয়ালন্দ বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারে বেশ কিছু কামার সম্প্রদায়ের দোকান আছে ।

কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে পেশাদার এসব কামার সম্প্রদায়ের লোকেরা লোহা কিনে সেই গুলাকে আগুনে পুড়িয়ে চাকু,ছুরি,চাপাতি,দা বঁটি সহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করছেন।

কামার সম্প্রদায়ের লোকেরা এইসব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মৌসুমী চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকেন বলে জানা গেছে।

অনেক ক্রেতা জানান, গত বছরের তুলনায় লোহার দাম এই বছর অনেক বেশি হওয়া লোহার তৈরি সরঞ্জামাদির দাম অনেক বেড়েছে ভালো মানের লোহার ইস্পাতের তৈরি

চাপাতির দাম ৮০০/- টাকা থেকে ৯০০/-টাকা কেজি , ইস্পাতের তৈরি ছুরি (ছোট)১৫০ টাকা, লোহার ইস্পাতের তৈরি দা ১,০০০ কেজি টাকা, লোহার ইস্পাতের তৈরি বটি ১,০০০ টাকা কেজী পর্যন্ত বেচা কেনা হচ্ছে। কামারা বলছেন লোহার দাম ও মজুরি বৃদ্ধি হওয়ায় লোহার ইস্পাতের তৈরি সরঞ্জামাদির দাম একটু বেশি।