Dhaka 12:18 am, Tuesday, 8 July 2025

ক্লুলেস নুরজাহান হত্যা রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ২

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস নুরজাহান বেগম (৬৫) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। স্বামী-সন্তানহীন নুরজাহান বেগমের সম্পত্তি গ্রাস করতে না পেরে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে তার স্বর্ণালঙ্কার লুট করে মরদেহ ফেলে যায় ঘাতকরা। এ ঘটনায় মাস্টারমাইন্ডসহ হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো—ভোলা জেলার চর ফ্যাশন থানার ফকির কান্দি (নতুনঘাট) গ্রামের মৃত আপতাব মোল্লার ছেলে মো. কালাম মিয়া (৩৮)। তাকে গত ৫ মে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কালাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং মূল পরিকল্পনাকারীর নাম প্রকাশ করে।

কালামের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন ৬ মে রাতে নাগরপুর উপজেলার বাঘের বাড়ি গ্রামের মো. তোফায়েল হোসেন ওরফে তোফা মেম্বার (৪২) কে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি এ হত্যার মূল মাস্টারমাইন্ড বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে’২৫) সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের খামার ধল্লা গ্রামের বাসিন্দা নুরজাহান বেগম ছিলেন নিঃসন্তান ও একাকী। তার জমিজমার প্রতি লোভ পড়ে পার্শ্ববর্তী বাঘের বাড়ি গ্রামের তোফা মেম্বারের। নানা কৌশলে জমি দখলের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় নুরজাহানকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে সে।

গত ১২ মার্চ সকালে নুরজাহান বেগম একটি প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে জমি থেকে গম, ভুট্টা ও পায়রার শিষ কুড়াতে বের হন। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় তার স্বজনরা খোঁজ শুরু করেন। রাতে স্থানীয় রতনের তামাকক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

পরদিন ১৩ মার্চ নিহতের ভাতিজা অজ্ঞাত আসামি উল্লেখ করে নাগরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ও জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কালাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার ভাড়া নেওয়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় নিহতের রুপার বালা। এরপর তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তোফা মেম্বারকে গ্রেফতার করা হয়।

নাগরপুর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “এটি একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড ছিল। আমরা সফলভাবে রহস্য উদঘাটন করেছি। ইতোমধ্যে একজন আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন, অপরজন রিমান্ডে আছে। আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ডিমলায় রাস্তার কাজ পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

ক্লুলেস নুরজাহান হত্যা রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ২

Update Time : 08:56:59 pm, Thursday, 8 May 2025

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস নুরজাহান বেগম (৬৫) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। স্বামী-সন্তানহীন নুরজাহান বেগমের সম্পত্তি গ্রাস করতে না পেরে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে তার স্বর্ণালঙ্কার লুট করে মরদেহ ফেলে যায় ঘাতকরা। এ ঘটনায় মাস্টারমাইন্ডসহ হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো—ভোলা জেলার চর ফ্যাশন থানার ফকির কান্দি (নতুনঘাট) গ্রামের মৃত আপতাব মোল্লার ছেলে মো. কালাম মিয়া (৩৮)। তাকে গত ৫ মে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কালাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং মূল পরিকল্পনাকারীর নাম প্রকাশ করে।

কালামের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন ৬ মে রাতে নাগরপুর উপজেলার বাঘের বাড়ি গ্রামের মো. তোফায়েল হোসেন ওরফে তোফা মেম্বার (৪২) কে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি এ হত্যার মূল মাস্টারমাইন্ড বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে’২৫) সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের খামার ধল্লা গ্রামের বাসিন্দা নুরজাহান বেগম ছিলেন নিঃসন্তান ও একাকী। তার জমিজমার প্রতি লোভ পড়ে পার্শ্ববর্তী বাঘের বাড়ি গ্রামের তোফা মেম্বারের। নানা কৌশলে জমি দখলের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় নুরজাহানকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে সে।

গত ১২ মার্চ সকালে নুরজাহান বেগম একটি প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে জমি থেকে গম, ভুট্টা ও পায়রার শিষ কুড়াতে বের হন। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় তার স্বজনরা খোঁজ শুরু করেন। রাতে স্থানীয় রতনের তামাকক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

পরদিন ১৩ মার্চ নিহতের ভাতিজা অজ্ঞাত আসামি উল্লেখ করে নাগরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ও জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কালাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার ভাড়া নেওয়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় নিহতের রুপার বালা। এরপর তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তোফা মেম্বারকে গ্রেফতার করা হয়।

নাগরপুর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “এটি একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড ছিল। আমরা সফলভাবে রহস্য উদঘাটন করেছি। ইতোমধ্যে একজন আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন, অপরজন রিমান্ডে আছে। আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।