Dhaka 11:52 pm, Wednesday, 16 July 2025

ফরিদপুরে অষ্টম শ্রেণির ছত্রীকে শিক্ষকের কুপ্রস্তাব, ধামাচাপার চেষ্টা প্রধান শিক্ষকের 

ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক মো. রহিস উদ্দিন শিকদারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীটিকে প্রাইভেট পড়াতেন। প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিয়মিত কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলতেন বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী ছাত্রী।

ভুক্তভোগী ছাত্রী জানায়, শিক্ষক রহিস উদ্দিন এক পর্যায়ে তাকে বলেন, “প্রাইভেটের কোনো টাকা লাগবে না, বরং আমি তোমাকে বাড়তি টাকা দিব।” গত ২৯ এপ্রিল তিনি মেয়েটিকে অন্তর্বাস কেনার জন্য টাকা দেন, কিন্তু ছাত্রীটি ঘৃণা ও ভয়ের কারণে সেই টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এই ঘটনার ফলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মেয়েটি।

ঘটনার পরপরই ছাত্রীটি বিষয়টি তার পরিবার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেনকে জানায়। তবে প্রধান শিক্ষক অভিযোগটি গোপন রাখতে নানা ধরনের চাপ প্রয়োগ করেন। পরবর্তীতে সাংবাদিকরা বিষয়টি তদন্ত করতে বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমার প্রতিষ্ঠানে ঘটনা ঘটেছে, এর বিচার আমি করব।” তিনি সাংবাদিকদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বাধা দেন এবং স্কুল হঠাৎ ছুটি ঘোষণা করেন।

 

অভিযুক্ত শিক্ষক রহিস উদ্দিন শিকদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও বিষয়টি গোপন রাখা হয়। তবে ভুক্তভোগী ছাত্রী সাহস করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা এবং সদরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। ইউএনও জাকিয়া সুলতানা জানান, “ঘটনাটি আমার কাছে সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছিল। তবে ভুক্তভোগী ছাত্রী নিজে এসে অভিযোগ দিয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, “এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঘটনার পর থেকেই এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা অভিযুক্ত শিক্ষক মো. রহিস উদ্দিন শিকদার এবং প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেনের দ্রুত অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

সিংগারবিল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত

ফরিদপুরে অষ্টম শ্রেণির ছত্রীকে শিক্ষকের কুপ্রস্তাব, ধামাচাপার চেষ্টা প্রধান শিক্ষকের 

Update Time : 06:38:58 pm, Thursday, 8 May 2025

ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক মো. রহিস উদ্দিন শিকদারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীটিকে প্রাইভেট পড়াতেন। প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিয়মিত কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলতেন বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী ছাত্রী।

ভুক্তভোগী ছাত্রী জানায়, শিক্ষক রহিস উদ্দিন এক পর্যায়ে তাকে বলেন, “প্রাইভেটের কোনো টাকা লাগবে না, বরং আমি তোমাকে বাড়তি টাকা দিব।” গত ২৯ এপ্রিল তিনি মেয়েটিকে অন্তর্বাস কেনার জন্য টাকা দেন, কিন্তু ছাত্রীটি ঘৃণা ও ভয়ের কারণে সেই টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এই ঘটনার ফলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মেয়েটি।

ঘটনার পরপরই ছাত্রীটি বিষয়টি তার পরিবার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেনকে জানায়। তবে প্রধান শিক্ষক অভিযোগটি গোপন রাখতে নানা ধরনের চাপ প্রয়োগ করেন। পরবর্তীতে সাংবাদিকরা বিষয়টি তদন্ত করতে বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমার প্রতিষ্ঠানে ঘটনা ঘটেছে, এর বিচার আমি করব।” তিনি সাংবাদিকদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বাধা দেন এবং স্কুল হঠাৎ ছুটি ঘোষণা করেন।

 

অভিযুক্ত শিক্ষক রহিস উদ্দিন শিকদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও বিষয়টি গোপন রাখা হয়। তবে ভুক্তভোগী ছাত্রী সাহস করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা এবং সদরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। ইউএনও জাকিয়া সুলতানা জানান, “ঘটনাটি আমার কাছে সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছিল। তবে ভুক্তভোগী ছাত্রী নিজে এসে অভিযোগ দিয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, “এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঘটনার পর থেকেই এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা অভিযুক্ত শিক্ষক মো. রহিস উদ্দিন শিকদার এবং প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেনের দ্রুত অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।