Dhaka 11:35 pm, Monday, 7 July 2025

উজিরপুরে ভ্রাম্যমান আদালতে ভুয়া ডাক্তার রেজাউলের ১ বছরের কারাদণ্ড

বরিশালের উজিরপুরে মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করে নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার দাবীদার রেজাউল করিম কে এক বছরের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

একাধিক গনমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পরে নড়ে চরে বসে প্রশাসন। ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিম সাতলা গ্রামের মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাইনুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুমি রানী মিত্র একটি অভিযান পরিচালনা করেন তাতে বিভিন্ন ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাকে।

মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করা সনদবিহীন রেজাউল করিম নিজেকে একজন এমবিবিএস ডাক্তার দাবী করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত পশ্চিম সাতলা গ্রামে অপচিকিৎসা করে আসছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভুয়া পরিচয়ে তিনি জটিল সব রোগের চিকিৎসা দেন এবং সার্জারিও করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক রোগী ও নার্সকে যৌন হয়রানি, মারধর, সাংবাদিকদের লাঞ্চিত সহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

রেজাউল করিম কখনও আবার সুযোগ বুঝে সাংবাদিক পরিচয়, আবার কখনও টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক, ঢাকা ও বরিশাল শহর থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার মালিক-প্রকাশক হিসেবেও পরিচয় দিতেও দেখা গেছে। সর্বশেষে তিনি উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সীমান্তবর্তী ও কোটালীপাড়া উপজেলার পূর্ব-দক্ষিণ সীমান্তের পশ্চিম সাতলা গ্রামে গড়ে তুলেন ‘মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার’। ওই সেন্টারে বসেই বছরের পর বছর ধরে গ্রামগঞ্জের সহজ সরল রোগীদের অপচিকিৎসা করছেন তিনি। তার অপচিকিৎসায় বহু রোগীর মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব বরনের অভিযোগ রয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, ওই ক্লিনিকে রোগীদের ভর্তির পরে চিকিৎসা প্রদান বা জটিল অপারেশন করার তথ্য ডায়েরি বা রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করেননা রেজাউল করিম। এতে তার কাজের কোনো প্রমাণ থাকে না। রোগীদেরকেও কোনো প্রমাণপত্র দেওয়া হয় না। এ ছাড়া তার সনদপত্রে লেখা-‘চার্টার অব অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব ইন্ডো অ্যালোপ্যাথি অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’। কিন্তু অনুসন্ধান করে এই নামে সনদপত্র প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি।

উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মোঃ মাইনুল ইসলাম খান বলেন ‘তিনি ভারতের একটি সনদপত্র দেখান। এটার কোনো বৈধতা নেই। তার যেহেতু এমবিবিএসের সনদ নেই, তাই তার দেখানো এসব ডিগ্রির কোনো দাম নেই। তাকে ১ বছরের সাজা প্রদান করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ডিমলায় রাস্তার কাজ পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

উজিরপুরে ভ্রাম্যমান আদালতে ভুয়া ডাক্তার রেজাউলের ১ বছরের কারাদণ্ড

Update Time : 07:12:59 pm, Tuesday, 29 April 2025

বরিশালের উজিরপুরে মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করে নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার দাবীদার রেজাউল করিম কে এক বছরের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

একাধিক গনমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পরে নড়ে চরে বসে প্রশাসন। ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিম সাতলা গ্রামের মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাইনুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুমি রানী মিত্র একটি অভিযান পরিচালনা করেন তাতে বিভিন্ন ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাকে।

মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করা সনদবিহীন রেজাউল করিম নিজেকে একজন এমবিবিএস ডাক্তার দাবী করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত পশ্চিম সাতলা গ্রামে অপচিকিৎসা করে আসছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভুয়া পরিচয়ে তিনি জটিল সব রোগের চিকিৎসা দেন এবং সার্জারিও করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক রোগী ও নার্সকে যৌন হয়রানি, মারধর, সাংবাদিকদের লাঞ্চিত সহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

রেজাউল করিম কখনও আবার সুযোগ বুঝে সাংবাদিক পরিচয়, আবার কখনও টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক, ঢাকা ও বরিশাল শহর থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার মালিক-প্রকাশক হিসেবেও পরিচয় দিতেও দেখা গেছে। সর্বশেষে তিনি উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সীমান্তবর্তী ও কোটালীপাড়া উপজেলার পূর্ব-দক্ষিণ সীমান্তের পশ্চিম সাতলা গ্রামে গড়ে তুলেন ‘মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার’। ওই সেন্টারে বসেই বছরের পর বছর ধরে গ্রামগঞ্জের সহজ সরল রোগীদের অপচিকিৎসা করছেন তিনি। তার অপচিকিৎসায় বহু রোগীর মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব বরনের অভিযোগ রয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, ওই ক্লিনিকে রোগীদের ভর্তির পরে চিকিৎসা প্রদান বা জটিল অপারেশন করার তথ্য ডায়েরি বা রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করেননা রেজাউল করিম। এতে তার কাজের কোনো প্রমাণ থাকে না। রোগীদেরকেও কোনো প্রমাণপত্র দেওয়া হয় না। এ ছাড়া তার সনদপত্রে লেখা-‘চার্টার অব অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব ইন্ডো অ্যালোপ্যাথি অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’। কিন্তু অনুসন্ধান করে এই নামে সনদপত্র প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি।

উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মোঃ মাইনুল ইসলাম খান বলেন ‘তিনি ভারতের একটি সনদপত্র দেখান। এটার কোনো বৈধতা নেই। তার যেহেতু এমবিবিএসের সনদ নেই, তাই তার দেখানো এসব ডিগ্রির কোনো দাম নেই। তাকে ১ বছরের সাজা প্রদান করা হয়েছে।