
বরগুনার আমতলী উপজেলায় পাওনাদারকে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে পাওনা টাকার ডকুমেন্টস (স্টাম্প) ছিঁড়ে ফেলে সাজানো ডাকাতির মামলা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আমতলীর উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামের বাবুল হাওলাদারের ছেলে কবিরের বিরুদ্ধে।
গুরুদল গ্রামের কবির (৪০) পিতা মোঃ বাবুল হাওলাদার আপন মামা মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে জমি বাবদ ১,২০,০০০/-(এক লক্ষ বিশ হাজার) টাকা ধার নেয়। দুই বছর পর কবির ধারের টাকা ফেরৎ দেয়ার কথা বলে নিজের কাছে ডেকে নেয় মনিরুজ্জামান এর ছেলে কাওসারকে। নিজের আপন ফুফাত ভাইর টাকা পাওয়ার আশায় ফেরৎ দেয় ডকুমেন্ট (স্টাম্প), ডকুমেন্টস হাতে নিয়ে ছিড়ে ফেলে দেনাদার কবির এবং পাওনাদারকে বলে তোকে কোন টাকা দিবো না, যা পারো করিস। এই বলে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায়।
এরপর উল্টো কাওসারকে ফাঁসানোর জন্য সাজানো হয় ডাকাতির নাটক। পরেরদিন সন্ধ্যার পরে আমতলী থেকে নিজের বাড়ী গুরুদল ফিরছিলেন কাওসার, যাওয়ার পথে বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কিছুটা পশ্চিমে স্লুইসের কাছে ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করে কবির এবং নিজের আপন মামাত ভাই কাওসারের নাম নিয়ে চিল্লাতে থাকে এবং বলতে থাকে আমার সব কিছু কাওসার নিয়ে চলে গেছে।
স্থানীয়দের কাছে খোজ নিয়ে জানা যায় ঐ দিন অত্র এলাকায় ডাকাতের কোন ঘটনা ঘটেনি এবং যখন কবির ডাকাত বলে চিৎকার করেছে তখন কাওসার ঘটনা স্থান থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বাজারে রিপনের দোকানে বসা ছিল। বাজারের ট্রেইলার দোকানদার রিপন বলেন, ওইরাতে এলাকায় ডাকাতির কোন ঘটনা ঘটেনি এবং কাওসার তখন আমার দোকানেই বসা ছিলো। কিন্তু কবির কাওসারের নাম বলে চিৎকার করতেছিলো যে আমার সব কিছু নিয়ে গেছে।
স্থানীয় এবং ঘটনা স্থানের দোকানদাররা বলেন, ডাকাতির ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা, অত্র এলাকায় কখনোই ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি এবং কাওসার খুব ভালো ছেলে, ওর টাকা ফেরত দিবেনা বলে ওকে ফাসানোর জন্য হয়তো কবির এই নাটক সাজিয়েছে।
গুরুদল গ্রামের মোঃ মনিরুজ্জামান (৫৫) দীর্ঘ ০৮ বছর প্রবাসে ছিলেন। বাড়ীতে তার প্রতিবেশী বোনের ছেলেকে জমি বাবদ ১,২০,০০০/-(এক লক্ষ বিশ হাজার) টাকা ধার বাবদ প্রদান করলে কবির ধারের টাকা পরিশোধ করতে তালবাহানা করতে থাকেন। ইতোমধ্যে পারিবারিক ভাবে দেনা পরিশোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করলে কবির তার মামাত ভাই মোঃ কাওসারকে (মনিরুজ্জামানের ছেলে) দেনা পাওনার লিখিত ডকুমেন্ট নিয়ে তার কাছে যেতে বলে কবির। কবির কাওসারের হাত থেকে ডকুমেন্ট নিয়েই ছিড়ে ফেলে এবং বলতে থাকে তোর টাকা পাওয়া শেষ এটা নিয়েই এতদিন লাফাইছো, এখন আর টাকা পাবিনা।
স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাওসার অত্যন্ত ভদ্র স্বভাবের ছেলে, তারা শিক্ষিত পরিবার, তার বিরুদ্ধ যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে এ গুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। ধারের টাকা পরিশোধ করবেনা বলেই এ ধরনের ঘটনা সাজানো হয়েছে।
উল্লেখ্য: ডাকাতির ঘটনার বিবরন দিয়ে কাওসারের বিরুদ্ধে বরগুনা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন অভিযুক্ত কবির।
এ বিষয়ে জানতে কবিরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।